
১২ বছরে প্রথম ড্র, ৪০৪ ওভারের পরও ফলহীন টেস্ট
খেলা ডেস্ক
২১ জুন ২০২৫, ১৮:৫১
টেস্ট ক্রিকেটে শেষ কবে ড্র করেছিল বাংলাদেশ, জানতে হলে তিন বছর পেছনে ফিরতে হবে। ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ড্রয়ের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে সেবার দুই ম্যাচের প্রথমটাতে ড্র করতে পেরেছিল টাইগাররা। তিন বছর এক মাস পর আবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ড্র এর দেখা পেল বাংলাদেশ।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ইদানীংকালে অমীমাংসিত টেস্ট খুবই কমই দেখা যায়। প্রায়শই নিজেদের সুবিধাজনক পিচ বানিয়ে ফায়দা লুটে নেয় স্বাগতিকেরা। শ্রীলঙ্কার গল ভেন্যু স্পিনারদের জন্য সুবিধাজনক পিচ মনে করা হলেও এই ম্যাচে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ম্যাচের পঞ্চম দিনে এসে কিছু টার্নের দেখা মিলেছে।

বৃষ্টির বাগড়ার পরেও ম্যাচের পাঁচ দিনে মোট ৪০৪ ওভার বল করেছে দুই দেশের ক্রিকেটাররা। গেল দুই বছরের টেস্টে এত বেশি বল কেবল একটি ম্যাচেই দেখা গিয়েছিল। গেল বছর বোর্ডার-গাভাস্কার টেস্টে ৪০৫ ওভার বল করেছিল ভারত-অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। সেই ম্যাচেও শেষ পর্যন্ত কোনো ফলাফল আসেনি।
শ্রীলঙ্কার গলে সবশেষ ২৯ টেস্টের সবগুলোতেই ফলাফলের দেখা মিলেছে। লঙ্কানদের এই ভেন্যুতে ১২ বছর আগে সবশেষ ম্যাচ ড্র হয়েছিল ২০১৩ সালে। সেই ম্যাচটাও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিল শ্রীলঙ্কা। মুশফিকের নেতৃত্বাধীন সেই ম্যাচে রানের পাহাড় দেখা মিললেও ম্যাচের ফলাফল আসেনি। তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের পাল্লা ভারি করেছন মুশফিক, নাসির ও আশরাফুল।

গলে প্রায় এক যুগ পর ড্র হওয়া ম্যাচেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এমনকি ম্যাচের উভয় ইনিংসে শতক করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১২৫ রান করেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুইবার টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করলেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র হওয়া এই ম্যাচে শুরুতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। মুশফিকের ১৬৩ ও শান্তের ১৪৮ রানে ৪৯৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা। জবাবে ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার ১৮৭ রানে ভর করে ৪৮৫ রানে লঙ্কানদের ইনিংস। তাতে দশ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

ওপেনার সাদমানের ৭৬ রানের ইনিংসে ১৮৭ রানের লিড নিয়ে ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষ করে টাইগাররা। পঞ্চম দিনে শতকের মাইলফলক ছুঁয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করেন বাংলাদেশ। তাতে ৩৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯৬ রান।
শুরুটা ইতিবাচক শুরু করলেও দুই উইকেট হারানোর পর খোলসবন্দী হয়ে লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত চার উইকেট হারালেও দিন শেষ হওয়ার ছয় ওভার আগেই ম্যাচ ড্র মেনে নেয় বাংলাদেশ অধিনায়ক। তাতে তিন বছর পর ফলহীন টেস্টের স্বাদ পেল টাইগাররা। গলের মাটিতে যা হয়েছে এক যুগ পর।

ম্যাচের চার ইনিংসেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন স্পিনাররা। তবে ব্যাটারদের জন্য সুবিধাজনক পিচ তৈরি করায় তাইজুল-নাইমদেরও সংগ্রাম করতে হয়েছিল।
আগামী ২৫ জুন সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। কলম্বোর মাটিতে লঙ্কানদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। এর মধ্য দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের প্রথম ম্যাচে ড্র পেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ফলাফল কী হয়, সেটাই দেখার বিষয়। তবে সবশেষ চক্রে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
এমআই