
গুগল সার্চের শীর্ষে ইয়ামাল-হার্দিক, যা করেছেন তারা
খেলা ডেস্ক
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:২৩
প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। অজানা তথ্য খুঁজতে গুগলের সার্চ প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের কাছে সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। বিশেষ কোনো তথ্য বা বিখ্যাত কারও সম্পর্কে জানতে গুগল সার্চ বক্সে একটি ক্লিকই যথেষ্ট। সাধারণত, বিনোদন এবং খেলার জগতের তারকাদের প্রতি মানুষের নজর থাকে বেশি। কোন তারকা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, সাফল্যের চূড়ায় কীভাবে আরোহণ করছে- গুগলের মাধ্যমে তার সবটাই জানা যায়।
গুগলের মাধ্যমে চলতি বছরে বিশ্বের নানান অ্যাথলেটদের খুঁজে বেড়িয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীরা। ফুটবল, ক্রিকেটসহ নানান অঙ্গনের মানুষ রয়েছে এ তালিকায়। ২০২৪ সালের গুগল সার্চে সেরা দশজনের মধ্যে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বার্সোলোনার যুব তারকা লামিনে ইয়ামাল। ক্রিকেটারদের মধ্যে ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া রয়েছেন এ তালিকায়। ব্যাট বলের একমাত্র কারিগর হিসেবে তালিকায় জায়গা পাওয়া এ অলরাউন্ডারের অবস্থান সপ্তম।
হার্দিক-ইয়ামালকে চলতি বছরে কেন এত খুঁজছে মানুষ, কোন অবদান তাদের বাকিদের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে- তা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
রেকর্ডের ইয়ামাল
বার্সেলোনার একাডেমি থেকে উঠে আসা লামিনে ইয়ামাল ফুটবল জগতের উঠতি তারকা। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই পায়ের কৌশল ব্যবহারে ফুটবল প্রেমীদের কাছে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। বার্সেলোনার জার্সিতে সবচেয়ে কম বয়সে লা লিগায় গোল, কম বয়সে এল ক্লাসিকো ও চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকের মতো রেকর্ডও গড়েন এ ফুটবলার।
স্প্যানের এই রাইট উইঙ্গার ২০২৪ সালে জিতেছেন ‘গোল্ডেন বয়’ পুরস্কার। এছাড়া স্পেনের হয়ে ইয়ামাল জিতেছেন ইউরো, হাতে তোলেন টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কারও। পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-২১ বয়সী সেরা খেলোয়াড়ের আরেক পুরস্কার কোপা ট্রফিও জেতেন এ তরুণ। লামিনে ইয়ামাল যা কিছু করবেন, যা কিছু পাবেন- তার সবই যেন রেকর্ড আর ইতিহাস।
লা লিগায় চলতি বছরে ১৫ ম্যাচে ৫ গোলের সাথে ইয়ামালের অবদান ৯ অ্যাসিস্ট। চ্যাম্পিয়নস লিগেও এক গোলের বিপরীতে ২ অ্যাসিস্ট করেছেন এ ফুটবলার। সংখ্যার পরিসংখ্যানে আহামরি কিছু মনে না হলেও মাঠে দুই পায়ের ঝলকে ইয়ামাল কোচ, বিশ্লেষক, ভক্তদের নজর কাড়তে বাধ্য করেন।
দুয়োধ্বনি থেকে প্রশংসার হার্দিক
ক্রিকেট তারকা হিসেবে রোহিত শর্মা ভারত তো বটেই, পুরো বিশ্বে এক অন্যন্য নাম। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে দীর্ঘদিন অধিনায়কত্ব করেছেন, শিরোপাও জিতিয়েছেন একাধিকবার। তবে ২০২৪ সালের আইপিএলে রোহিতকে সরিয়ে হার্দিক পান্ডিয়াকে ক্যাপটেন্সির দায়িত্ব দেয় ভারত। তাতেই ভক্তদের কাছে এক বিদ্বেষের নাম হয়ে উঠেন হার্দিক। নিজের মাঠে খেলেছেন এমন ম্যাচেও দর্শকদের দুয়োধ্বনি শুনেছেন এ অলরাউন্ডার। মুম্বাইকে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে রেখেই আইপিএলের এবারের আসর শেষ করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তাতে দর্শকদের পাশাপাশি বিশ্লেষকদের রোষানলে পড়েন এ বিধ্বংসী ব্যাটার।
শুধু আইপিএল নয়, জাতীয় দলের হয়ে বছরের শুরুতে বেশ বাজে সময় কাটাচ্ছিলেন হার্দিক। তাতে দল থেকে বাদ পড়ার রব উঠেছিল। কিন্তু পান্ডিয়াই ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। ফাইনাল ম্যাচে চাপের মুখে ৪ ওভার বল করে ২০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট, যার ২টি আবার হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য যখন দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ১৬ রান, তখন অধিনায়ক রোহিত বল তুলে দেন পান্ডিয়ার হাতে। তিনি মাত্র ৮ রান দিলে ৭ রানের জয় পায় ভারত। তাতে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তোলে ভারত।
বিশ্বকাপে হার্দিকের ব্যাট বলে সমান পারদর্শীতায় পাল্টে যায় ভক্তদের মতিগতি। দুয়োধ্বনির পরিবর্তে বিশ্বজুড়ে এ অলরাউন্ডার প্রশংসায় ভাসেন। নিজের ফিরে আসার গল্পে ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে বার্বাডোজের ২২ গজে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বিশ্বকাপের পরেও বছরের বাকি সময় ব্যাটে বলে উজ্জ্বল ছিলেন এ অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টিতে অন্তত দশ ম্যাচ খেলেছেন এমন বছরের মধ্যে ২০২৪ সাল হার্দিক পান্ডিয়ার পুরো ক্যারিয়ারের সেরা বছর। ব্যাট হাতে ১৬ ম্যাচে এ বছর ৪৪ গড়ে করেছেন ৩৫২ রান, স্ট্রাইকরেট ১৫০। বল হাতে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের ১৬ উইকেট।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে খেলোয়াড়দের মধ্যে গুগল সার্চের শীর্ষে ছিলেন আলজেরিয়ার বক্সার ইমানে খেলিফ। প্যারিস অলিম্পিকে চলতি বছরে নারীদের ওয়েল্টারওয়েট বক্সিংয়ে চীনের ইয়ং লিউকে হারিয়ে সোনা জিতেছেন তিনি। এটিই আলজেরিয়ার ইতিহাসে প্রথম কোনো নারী বক্সার হিসেবে অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়। এছাড়া তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা বক্সার মাইক টাইসন।
এমআই