Advertisement
Us Bangla Airlines
ব্রাজিলের হতাশার দিনে জয়ে ফিরল আর্জেন্টিনা

ব্রাজিলের হতাশার দিনে জয়ে ফিরল আর্জেন্টিনা

খেলা ডেস্ক

২০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪

চলতি বছরে নিজেদের শেষ ম্যাচে দুই লাতিন জায়ান্ট ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রায় একই সময়ে মাঠে নেমেছিল। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে পেরুকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা জয়ে বছরটা শেষ করলেও হতাশার ড্র’ই সঙ্গী ব্রাজিলের। 

আর্জেন্টিনা ১ - ০ পেরু

চলতি বছরটা মিশ্র কেটেছে বিশ্বচ্যাম্পিন আর্জেন্টিনার। এ বছরই কোপা আমেরিকা জয়ের স্বাদ পেলেও শেষ কয়েক ম্যাচে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছে লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যদের। গত ম্যাচেই প্যরাগুয়ের কাছে হেরেছে দল। সেটাও আবার এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৮ বছর পরের হার। স্বাভাবিকভাবেই ফিরে আসার তাগিদ ছিল আর্জেন্টিনার সামনে। সেই কাজটা যে সহজ ছিল না সেটাও বোঝা গেল আর্জেন্টিনার মাঠের খেলায়। ঘরের মাঠ লা বোম্বানেরায় পূর্ণ সমর্থন পেয়েও পেরুর জালে এক গোলের বেশি দেওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। 

দলে একাধিক ইনজুরি সমস্যা। শুরুর একাদশে ছিলেন না একাধিক তারকা। আলবিসেলেস্তেদের খেলায় তার প্রভাব ছিল স্পষ্ট। ম্যাচে মিডফিল্ড আর আক্রমণভাগে নিয়মিত খেলোয়াড়দের পেলেও বিল্ড-আপে কিছুটা ভুগতে হয়েছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। প্রথমার্ধে ৭৬ শতাংশ বল পায়ে রাখলেও তাই কিছুটা মলিন ছিল তাদের আক্রমণ। পুরো ৪৫ মিনিটে কেবল একবারই গোলমুখে শট নিতে পেরেছিল তারা। 

আলবিসেলেস্তেদের গোলের খরা কাটল দ্বিতীয়ার্ধে এসে। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে দারুণ এক চিপ করেন লিওনেল মেসি। ইনফর্ম স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজ শূন্যে ভেসে করলেন দুর্দান্ত এক ভলি। তাতেই ডেডলক ভাঙে আর্জেন্টিনার। ৫৫ মিনিটের সেই গোলেই বছরের শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এটি দেশটির ফুটবলে ১ হাজার ৯৯৯তম গোল। 

এ জয়ের পর ১২ ম্যাচ থেকে আর্জেন্টিনার সংগ্রহ ২৫ পয়েন্ট। নিজেদের খেলা যখন শেষ হয়েছে তখন লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তারা এগিয়ে আছে ৫ পয়েন্টের ব্যবধানে। দুই থাকা উরুগুয়ে নিজেদের ম্যাচে জয় পেলে সেটা নেমে আসবে ৩ পয়েন্টে। তবে শীর্ষস্থান হারাতে হচ্ছে না তাদের। পরেরবার আর্জেন্টিনাকে মাঠে দেখা যাবে ২০২৫ এর মার্চে। 

ব্রাজিল ১ - ১ উরুগুয়ে

ব্রাজিলের ফুটবলে সময়টা ভালো যাচ্ছে না বেশ অনেকটা দিন ধরেই। কোচ দরিভাল জুনিয়রের উড়ন্ত শুরুটাও অনেকটা মাটিতে নেমেছে সময়ে সময়ে। চলতি বছর মহাদেশীয় আসরে শেষ চারেও যেতে পারেনি ব্রাজিল। হারতে হয়েছিল উরুগুয়ের কাছে। বছরের শেষ ম্যাচেও সেই একই প্রতিপক্ষের কাছে হতাশাজনক এক ড্র করেছে সেলেসাওরা। 

অবশ্য পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফিরে আসাটাও ব্রাজিলের জন্য এই ম্যাচে কম প্রাপ্তির নয়। প্রথমার্ধে আক্রমণভাগে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটের মাথায় গোল হজম করতে হয় তাদের। সেখান থেকেই অবশ্য ফিরে এসেছে তারা। অনেকটা উত্তেজনাহীন প্রথমার্ধের পর আসে দুর্দান্ত এক দ্বিতীয়ার্ধ। যেখানে ব্রাজিল ছিল আরও বেশি ক্ষুরধার। উরুগুয়েও অনেকটাই খোলস ছেড়ে লড়তে চেয়েছিল সমানে সমানে। শুরুর গোলটাও পায় তারাই।

ডি-বক্সের বাইরে খুব একটা ভীতি ছড়ানো আক্রমণ ছিল না সেটি। ফেডে ভালভার্দে যখন বল পায়ে পেয়েছেন, তখনো ঠিক ভয় ধরানো অবস্থানে ছিল না উরুগুয়ে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার দেখালেন তার পায়ের কারুকাজ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো এক শট। তাতে পরাস্ত পুরো ব্রাজিলের রক্ষণভাগ। দুই ডিফেন্ডার আর গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ভালভার্দের শট আশ্রয় নেয় জালে। 

গোল শোধ করতে ব্রাজিল সময় নিয়েছে মোটে ৭ মিনিট। ব্রাজিলের মিডফিল্ডে কোচ দরিভালের বিশেষ আস্থার নাম গেরসন। তারই পা থেকে আসে গোল। রাফিনিয়ার ক্রসটা ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেনি উরুগুয়ের রক্ষণ। বল চলে যায় ডি-বক্সের বাইরে অনেকটা ফাঁকায় থাকা গেরসনের সামনে। দুর্দান্ত এক ভলি কাছের পোস্টে। সেখান থেকেই ব্রাজিলের সমতায় ফেরা। এরপর অবশ্য আর কেউই গোলের দেখা পায়নি। 

নভেম্বর উইন্ডোতে ব্রাজিল টানা দুই ড্রয়ে পিছিয়ে নেমে গেছে পাঁচে। ১২ ম‍্যাচে পাঁচ জয় আর তিন ড্রয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ‍্যাম্পিয়নদের পয়েন্ট ১৮। পাঁচ জয়ের সঙ্গে পাঁচ ড্রয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনা যথারীতি থাকছে সবার ওপরে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট।