বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার পর চলতি মাসেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ১-১ ড্র করেছিল টাইগাররা। তাতে ঘরের মাটিতে খর্ব শক্তির জিম্বাবুয়েকে হয়তো উড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছিল শান্তের দল।

সিরিজের প্রথম টেস্টে টাইগার ক্রিকেটারদের প্রত্যাশার বেলুন চুপসে গেছে। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরে বসেছে ফিল সিমন্সের শিষ্যরা। তাতে ক্রিকেট পাড়ায় শান্তদের সমালোচনা কম হয়নি। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে জয় পেতে মরিয়া বাংলাদেশ উইকেটে এনেছিল পরিবর্তন।

বিদেশি দল পেলেই বাংলাদেশ সাধারণত স্পিন পিচ বানিয়ে কাবু করতে চায়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে জয় পেতে চট্টগ্রামে স্পিন পিচ বানিয়েছিল বিসিবি। এমনকি পিচ বিবেচনায় বাড়তি স্পিনারও স্কোয়াডে ডেকেছিল বিসিবির নির্বাচক প্যানেল। ম্যাচে স্পিন বোলারদের রাজত্বও দেখা গিয়েছে।

ম্যাচের দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ২২ ওভার বল করেছিল টাইগার পেসাররা। এর মধ্যে অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব করেছিলেন মোটে ১০ ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিবকে বল করতে আনেনি শান্ত। হাসান মাহমুদকে ২ ওভার বল করিয়েও আর ডাকেননি তিনি।

জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের সব উইকেট তুলেছিল স্পিনাররা। ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও রোডেশিয়ানদের ৮ উইকেট তুলেছিলেন তাইজুল-নাইমরা। স্পিন বোলিংয়ে রাজত্ব করেছিল জিম্বাবুয়েও। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকাসা পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। তবুও চট্টগ্রামের পিচ স্পিন উইকেট মানতে নারাজ বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।

জিম্বাবুয়েকে হারাতে কেন স্পিন উইকেট, ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক উইকেটই থাকে। গরম আবহাওয়ায় পেসাররা খুব একটা সহায়তা পায় না। তাই আমরা দুজন পেসার নিয়ে খেলেছি। জিম্বাবুয়েও একজন পেসার বাদ দিয়ে বাড়তি স্পিনার খেলিয়েছে।’

তিনি জানান, উইকেটের কারসাজিতে সাফল্য পাওয়ার ধারণা করলে ভুল হবে। সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ইনিংসে ধৈর্য ধরে বল করেছি। স্পিনাররা খুব বেশি টার্ন পায়নি, তাইজুল ফ্লাইটে উইকেট পেয়েছে। কেউ যদি মনে করে আমরা পিচের কারণে জিতেছি, সেটা ভুল হবে।’

কম পেসার খেলানোর ব্যাখ্যা দিয়ে এ কোচ বলেন, ‘আমাদের পেসারদের প্রতি এখনও পূর্ণ আস্থা আছে। তবে বিপিএল ও ডিপিএলের কারণে তাদের গতি কিছুটা কমে গেছে। সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে তা ফিরে আসবে। একটা-দুটা ম্যাচের পারফরম্যান্স দিয়ে ক্রিকেটের অগ্রগতি বা পিছিয়ে যাওয়া নির্ধারণ করা যায় না।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিততেও বিসিবি পুরনো কৌশলের তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার। তার মতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেওয়া উচিত হয়নি।

হাবিবুল বাশার বলেন, ‘বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে আমরা হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতেই পারি। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন উইকেট বানানো কতটা যৌক্তিক, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমরা চাচ্ছিলাম ব্যাটারদের বাউন্সি উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শেখাতে। প্রথম টেস্টে সেটা হয়নি বলে যদি পুরোনো পথে ফিরি, সেটা সঠিক নয়।’

এমআই