
কীভাবে এত গতিতে বল করেন নাহিদ রানা, জানালেন নিজেই
খেলা ডেস্ক
০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৫০
বিপিএলের মাঝপথে ২০২৩ সালে হুট করে এক লম্বা পেসারকে দলে ভিড়িয়েছিল খুলনার কোচ খালেদ মাহমুদ। পুরো নাম নাহিদ রানা। লম্বায় ৬ ফুট ছাড়িয়ে। দীর্ঘদেহী এ পেসারকে ক্রিকেট ভক্তদের খুব একটা চেনার কথাও না। কারণ, বয়সভিত্তিক দলে তিনি খেলেননি কখনো। অপরিচিত এ বোলারকে বিপিএলে ঢাকা ডমিনেটরস দলের বিপক্ষে মাঠে নামায় খুলনা ম্যানেজম্যান্ট।
বিপিএলে অভিষেক ম্যাচের প্রথম বলেই ‘নো বল’ করে বসেন নাহিদ। পরবর্তীতে ফ্রি-হিট বলে ব্যাটারের স্টাম্প উপড়ে ফেলেছিলেন। কোন বাউন্ডারি হজম না করেই নিজের প্রথম ওভারে ১২ রান দিয়ে বসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্তান। খুলনার বোলিং শেষে সেদিন নাহিদের বোলিং ফিগার ছিল এমন, ৪ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট। টি-টোয়েন্টি যা আদর্শ বোলিং ফিগার বলা চলে।
২০২৩ আসরে বিপিএলে আরও দুই ম্যাচ খেলেন নাহিদ। কিন্তু তাতে বেশ খরুচে হয়ে পড়েন এ বোলার। সাথে দল হারার কারণে তেমন করে লাইমলাইটে আসেননি তিনি। তবুও গতির তোপে নাহিদকে মনে রেখেছে ক্রিকেট ভক্তরা। বিপিএলের পরবর্তী আসর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে নাহিদকে ড্রাফট থেকে দলে নেয়নি কোন দল। যদিও বিপিএলের মাঝে নাহিদকে আবার দলে নেয় খুলনা টাইগার্স।
বিপিএলে গত আসরে মাত্র দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ২২ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। মাত্র ২ উইকেট তোলা এ ম্যাচগুলোতে নাহিদ আলো কাড়েন তার গতিতে। চাঁপাইয়ের এ ক্রিকেটারের গতিটা এত বেশিই যে, বাংলাদেশ ক্রিকেটে যা অবিশ্বাস্য। গতি আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উইকেট তোলার দক্ষতা নাহিদকে জাতীয় দলের দরজায় পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত বছরের মার্চে অভিষেক হয় নাহিদ রানার। নিয়মিত ১৪০ কি.মি. গতিতে বল করা এ ক্রিকেটার সাদা পোশাকে ৬ ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন ২০ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটেও গতির ঝড়ে প্রতিপক্ষকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন এ ক্রিকেটার। গতি, বাউন্স আর দুর্দান্ত ফর্মে এবারের বিপিএলে চাহিদার তুঙ্গে ছিলেন টাইগারদের গতি দানব। ড্রাফট থেকে নাহিদকে দলে ভেড়ায় বড় বাজেটের দল রংপুর রাইডার্স।
রংপুরের হয়ে দুই ম্যাচ খেলা নাহিদ ইতোমধ্যে দলকে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে গতকাল মঙ্গলবার গতির ঝড়ে তুলেছেন ৪ উইকেট। জাকির হাসানের বোল্ড হওয়া বলে স্টাম্প উড়ে যাওয়ার দৃশ্যটি ছিল দেখার মতো। অনবদ্য বোলিংয়ে বিপিএলে প্রথমবারের মতো ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতলেন এ বোলার।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে নাহিদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো লাগছে। যেহেতু এর আগে আমি কখনও বিপিএলের কোনো ম্যাচে বা জাতীয় দলের ম্যাচে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হইনি। এই প্রথম ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়ে ভালো লাগছে।’
বাইশ গজে গতির ঝড়ে নজর কাড়া নাহিদ রানা গতি রহস্য নিয়েও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। কীভাবে এত গতিতে বল করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে এটা হার্ড ওয়ার্ক, নিজের ফিটনেস, মেইনটেইন, সব কিছু মিলিয়েই…।’
অবশ্য দিনশেষে নাহিদের বড় তৃপ্তি দলের চাওয়া পূরণ করতে পেরে, ‘রংপুর রাইডার্স যখন আমাকে দলে নিয়েছে, তাদের চাওয়া আছে, তা পূরণ করতে পেরে আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগছে।’
এমআই