
শেষ ওভারে ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন সোহান
খেলা ডেস্ক
০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৭
শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে রংপুর রাইডার্সের দরকার ছিল ২৬ রান। এমন সমীকরণে ৩ ছক্কা আর তিন চার হাঁকিয়ে ৩০ রান তুলেছেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। রংপুর রাইডার্স এবং ফরচুন বরিশালের হাইভোল্টেজ ম্যাচে উত্তাপটা যেন এবার সত্যিকার অর্থে টের পেয়েছেন ক্রিকেট ভক্তরা। অবিশ্বাস্য এ জয়ে বিপিএলের চলতি আসরের সব ম্যাচেই অপরাজিত থাকল রংপুর রাইডার্স।
রংপুরের এমন জয়ে পুরো আলোটাই অবশ্য নুরুলের দিকে। ম্যাচের ১৮তম ওভারের শেষ বলে উইকেটে আসেন এ ব্যাটার। শাহিন আফ্রিদির বলে ডাবল নিয়ে রানের খাতা খোলেন তিনি। অবশ্য নব্য উইকেটকিপার শান্তের অদক্ষতায় সেই বলে জীবন পেয়েছিলেন রংপুর অধিনায়ক। স্টাম্প থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সোহানকে রান আউট করতে ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
শেষ ওভারে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ক্যাপ্টেন কুল রাইডার সোহানের Last over | RR vs FB | 13th Match: BPL 2025 #rangpurriders #RRvsFB #BPL2025
Posted by Rangpur Riders on Thursday, January 9, 2025
শাহিন আফিদ্রির ওভার শেষে ১২ বলে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান। ১৯তম ওভারের শুরুতে দুই ছক্কা হজম করে ম্যাচের ফলাফল দোদুল্যমান করে তুলেন বরিশালের বিদেশি বোলার জাহানদাদ। যদিও শেষ চার বলে তিন উইকেট তুলে তামিম-রিয়াদদের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন এ অলরাউন্ডার। ফলে রংপুরকে জিততে শেষ ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২৬ রান।
কঠিন সমীকরণের সামনে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্সের হাতে বল তুলে দিয়েছিল বরিশাল। পার্ট টাইম বোলার হলেও ১ ওভারে ২৬ রান নেওয়া যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য বেশ কঠিন। নুরুল সেই কঠিন কাজটাই করলেন। মায়ার্সের সবগুলো বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ক্যারিবিয়ানের ওভারটি সাজিয়েছেন ঠিক এমন করে- ৬, ৪, ৪, ৬, ৪, ৬।
সোহানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে জেতা ম্যাচটি হেরে বসেছে ফরচুন বরিশাল। এ নিয়ে আসরের দ্বিতীয় হার দেখল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। দুটোই আবার রংপুরের বিপক্ষে। এর আগে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে রংপুর রাইডার্স।
এদিকে সিলেটে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশাল। দলের হয়ে ২৯ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেছেন কাইল মেয়ার্স। ওপেনিং জুটি থেকেও ভালো রান পেয়েছিল বরিশাল। জবাবে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ইনিংসের শেষ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় রংপুর।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। ফর্মে থাকা অ্যালেক্স হেলস আজ সুবিধা করতে পারেননি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। তানভির ইসলামের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে ৩ বলে করেছেন ১ রান।
শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিয়েছেন তৌফিক খান তুষার ও সাইফ হাসান। ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি সাইফ। ১৯ বলে ২২ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। আর তুষারের ব্যাট থেকে এসেছে ২৮ বলে ৩৮ রান।
৬৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন খুশদিল শাহ ও ইফতিখার আহমেদ। ৩৬ বলে ৪৮ রান করে ইফতিখার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৯১ রানের জুটি। আর খুশদিলের ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ৪৮ রান।
শেষদিকে ক্যামিওতে ঝলক দেখিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। প্রায় অসম্ভবকেই যেন সম্ভব করলেন তিনি। শেষ ওভারে যখন ২৬ রান দরকার তখন মেয়ার্সের করা ওভারের ৬ বলের সবকটিতেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন রংপুর অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ৭ বলে অপরাজিত ৩২ রান করে দলের নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন তিনি।
বরিশালের হয়ে দুইটি উইকেট তুলেন ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার জাহানদাদ খান। এছাড়া শাহিন, ফাহিম, রিশাদ, তানভীর তুলেন একটি করে উইকেট। এদিকে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে রংপুরের হয়ে দুইটি উইকেট তুলেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। সাইফুদ্দিন এবং আকিফ পেয়েছেন একটি করে উইকেট। তবে গত ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া নাহিদ রানা এ ম্যাচে ছিলেন উইকেট শূন্য।
এমআই