আনামুল হক বিজয়কে ঘরোয়া লিগের রাজা বলা চলে। স্থানীয় ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে খেলতে নামলেই বিজয়ের ব্যাটে রান দেখা যায়। গতকাল ডিপিএলে আবাহনীর বিপক্ষেও শতক হাঁকিয়েছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অধিনায়ক। সবমিলিয়ে স্বীকৃত ক্রিকেটে এখন ৫১টি সেঞ্চুরির মালিক আনামুল হক বিজয়। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ। 

ওয়ানডে ফরম্যাটের ডিপিএলে ইতিহাস গড়া বিজয়কে টেস্ট স্কোয়াডে ডেকেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাদা বলে রেকর্ড গড়া এই ব্যাটারকে হঠাৎ কেন লাল বলে ডেকেছেন, তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিসিবি। তবে ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে ফিরে হঠাৎ টেস্টে কতটা ভালো করবেন বিজয়, তা সময় বলে দিবে। কিন্তু বিসিবির এমন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হেরে বসেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই চাপে থাকবে নাজমুল শান্তের দল। চাপের মুহূর্তে ওয়ানডে থেকে ডেকে এনে ভিন্ন ফরম্যাটে বিজয়কে নামিয়ে কতটা পারফরম্যান্স আশা করে বিসিবি, তা বলাবাহুল্য। আবার লাল বলের প্রস্তুতি ছাড়াই টেস্টে বিজয়ের মাঠে নামা কিছুটা পিছিয়ে রাখবে।

বাংলাদেশ টেস্ট দলের ওপেনিংয়ে নিয়মিত মুখ জাকির হাসান, মাহমুদুল জয় এবং সাদমান ইসলাম। গত কয়েকবছর ধরে এই তিনজনই ঘুরেফিরে ওপেনিং করে থাকেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওপেনিং করেছেন জয় এবং সাদমান। দুই ইনিংস মিলিয়েও তারা বলার মতো কিছু করতে পারেননি। বরং দলকে চাপের মুখে ফেলে এসেছেন।

সাদমান-জয় বাজে পারফর্ম করে দ্বিতীয় টেস্টের দলে টিকে গেলেও বাদ পড়েছেন জাকির হাসান। বাঁহাতি এই ওপেনারকে কোনো ম্যাচ না খেলিয়ে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিসিবি। বরং জাকিরকে বাদ দিয়ে আচমকা আনামুল হক বিজয়কে টেস্ট দলে ডেকে পাঠিয়েছে লিপুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেল।

জাতীয় দলে সাদা পোশাকে বিজয়ের পারফরম্যান্স কতটা সন্তোষজনক, তা জেনে নেওয়া যাক। টেস্টে ৫ ম্যাচ খেলেছেন আনামুল হক। তাতে ১০ ইনিংসে ১০ গড়ে ১০০ রান করেছেন এই ওপেনার। নিশ্চিতভাবেই জাকির থেকে পরিসংখ্যান এবং ম্যাচ সংখ্যায় পিছিয়ে আছেন বিজয়। তবুও কীভাবে টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকেরা।

জাতীয় দলে না পারলেও ফার্স্ট ক্লাসে সেঞ্চুরির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন আনামুল হক বিজয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৪টি সেঞ্চুরি রয়েছে এই ব্যাটারের। সবশেষ মৌসুমেও উজ্জ্বল ছিল আনামুল হকের ব্যাট। খুলনার হয়ে গত এনসিএলে ১৩ ইনিংসে ৫৪ গড়ে ৭০০ রান করেছেন বিজয়। যেখানে ৬ ফিফটির সঙ্গে ১টি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছেন তিনি।

এনসিএলের একই মৌসুমে বিজয়ের চেয়ে বেশি রান করেছিলেন সিলেটের অমিত হাসান। ১২ ইনিংসে ৭৮ গড়ে ৭৮৫ রান করেন তিনি। তবুও অমিতকে জাতীয় দলের রাডারে আনেনি বিসিবি। এমনকি ডিপিএলে নিয়মিত রান পেলেও এই তরুণের পরিবর্তে দলে জায়গা পেয়েছেন আনামুল । তাতে প্রশ্ন ওঠেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে কোন সমীকরণে দলে জায়গা পেলেন এই ওপেনার।

এমআই