Advertisement
Us Bangla Airlines
ম্যাচ হেরেও কেন মেয়েদের নিয়ে গর্বিত জ্যোতি?

ম্যাচ হেরেও কেন মেয়েদের নিয়ে গর্বিত জ্যোতি?

খেলা ডেস্ক

১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:০৯

লক্ষ্যটা কম নয়, ২৩৩। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই রান করতে গিয়ে ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দল। তাতে মনে হয়েছিল, টাইগ্রেসদের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এমন ম্যাচই প্রোটিয়াদের কাছে হেরে বসেছে বাংলাদেশের নারী দল। তবুও ম্যাচ শেষে পুরো দল নিয়ে গর্বের সুর শোনা গেছে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির মুখে।

প্রশ্ন উঠতে পারে—হারার পরও কেন এত প্রশংসা অধিনায়কের? তার অবশ্য যৌক্তিক কারণও আছে। নারী বিশ্বকাপে খর্বকার দল হিসেবে বাছাইপর্ব থেকে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বাকিদের তুলনায় জ্যোতিদের ব্যাটিং-ফিল্ডিং বেশ পিছিয়ে। তবুও এমন দল নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়, ইংল্যান্ডকে কাঁপন ছুটিয়ে দিয়ে টাইগ্রেসরা। এটা অপ্রত্যাশিত বলাই যায়।

প্রোটিয়াদের ২৩৩ রানের লক্ষ্য দেয় টাইগ্রেসরা। জবাবে ৭৮ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় বাংলাদেশ। লরা উলভার্টের দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়ালেও, ১৯৮ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আবারও জয়ের আশায় বুক বাঁধে লাল-সবুজের শিবির। তবে তখনই হতাশ করেন ফিল্ডাররা—নাদিনে ডি ক্লার্কের সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন স্বর্ণা আক্তার। 
এর আগে ক্যাচ মিস করেন সুমাইয়া আক্তার। রানআউটের কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া হয় আরও। সেই ভুলগুলোই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ফসকে যাওয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবুও ভাঙেননি জ্যোতি। ম্যাচ শেষে বললেন, ‘শেষ বল পর্যন্ত মেয়েরা যেভাবে লড়েছে, আমি তাদের নিয়ে সত্যিই গর্বিত। একইসঙ্গে আমি দুঃখিত কারণ তারা ড্রেসিংরুমে গিয়ে কাঁদছে।’

জ্যোতি আরও বলেন, ‘তারা বয়সে অনেক তরুণ। তবে আজ সবাই ১১০ শতাংশ দিয়ে লড়েছে, সেজন্য আমি খুশি।’ হার মানলেও মন থেকে হেরে যায়নি দল। তরুণ হলেও তারা দেখিয়েছে পরিণত লড়াকু মনোভাব। স্বর্ণা আক্তার ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত ফিফটি (৩৪ বলে) করেছেন।

ব্যাটিংয়ের শুরু ছিল ধীর—১০ ওভারে ২৮, ১৬.১ ওভারে ৫৩ রান। তবে পরিকল্পনামাফিক উইকেট বাঁচানোই ছিল প্রধান লক্ষ্য। বড় জুটি গড়ার চেষ্টা সফল হয়েছে বলেই জানান অধিনায়ক। তার ভাষায়, ‘শুরুতে পরিকল্পনা ছিল পাওয়ার প্লেতে উইকেট না হারানো। পিংকি অনেক অভিজ্ঞ, ভালো খেলেছে। মিডল অর্ডারও সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’

এখনও বাকি তিনটি ম্যাচ, সেমিফাইনালের আশাও টিকে আছে। সেই লড়াইয়ের পথে এই ম্যাচটিকে অভিজ্ঞতা হিসেবে নিচ্ছেন জ্যোতি। বললেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও আমরা ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলাম। তখন ঠিক জায়গায় বল করতে পারিনি। আজ সেটা ঠিক করার চেষ্টা করেছি। দলটা তরুণ, কিন্তু উন্নতি করছে।’

ম্যাচ শেষে অধিনায়কের বার্তা পরিষ্কার—এটাই তাদের শেষ ম্যাচ নয়, আর এই দলটাই ভবিষ্যতের শক্তি। স্কোরবোর্ডে হার থাকলেও মনোবলে জিতেছে টাইগ্রেসরা। সেই লড়াকু মনোভাব, শেখার আগ্রহ আর জয়ের তাড়নাই নিগার সুলতানা জ্যোতির গর্বের কারণ। বাংলাদেশের এমন লড়াকু মনোভাব হয়তো আশা করেনি ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকাও।

এমআই