কালামের সেঞ্চুরির সাক্ষী বগুড়া, জয় পেল বাংলাদেশ
খেলা ডেস্ক
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৪৪
শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো, কিন্তু শেষটা রঙিন জয়োৎসবে ভরা। আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব–১৯ দলের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়ায় যখন একে একে ফিরছিলেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটাররা, তখন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল বগুড়ার মাঠ। তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যুবারা। কিন্তু সেই আঁধারে আলো জ্বেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছেছেন কালাম সিদ্দিকি অলীন।
দৃঢ়তায় গড়া এক অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। কালামকে সঙ্গ দিয়েছেন রিজান হোসেন। দুজনের জুটিতে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ বিকেলে আলোকস্বল্পতায় থেমে যায় খেলা, কিন্তু ততক্ষণে ডিএল মেথডে এগিয়ে ছিল লাল–সবুজের ছেলেরা। শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব–১৯ দল।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ১৬ বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিরেছে বগুড়ার শহীদ চান্দু ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৫ রান তোলে আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব–১৯ দল। জবাবে ৪৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান তুলে স্বাগতিকরা। তাতে ডিএল মেথডে ৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
এদিন শুরুতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানকে ৫৫ রান এনে দেন খালিদ ও ওসমান সাদাত। পাওয়ারপ্লেতে দুজনই ব্যাট চালান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। তবে দুজনই কাছাকাছি সময়ে ফেরেন সাজঘরে—খালিদ ৩৩ বলে ৩৪ ও ওসমান ২৬ বলে ১৫ রান করে আউট হন।
Kalam Siddiki Aleen – 101 off 119! A brilliant century before being dismissed, anchoring Bangladesh U19’s innings
Posted by Bangladesh Cricket : The Tigers on Tuesday, October 28, 2025
মাঝে ফয়সাল খান শিনোজাদা ৪৬ বলে ৩৩ রান করে বিদায় নিলে আফগান ইনিংসের ভরসা হয়ে দাঁড়ান উজাইরউল্লাহ নিয়াজাই। এক প্রান্ত আগলে রেখে গড়ে তোলেন এক অনবদ্য ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ১৩৭ বলে অপরাজিত ১৪০ রানে থেকে যান তিনি, ১৬টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস।
শেষ ওভারের আগেই রিজান হোসেনের জোড়া আঘাত ও ইকবাল হোসেন ইমনের তাণ্ডবে থেমে যায় আফগানদের অগ্রযাত্রা। ৫৭ রান খরচায় ইমন একাই নেন ৫ উইকেট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৫ রান।
জবাবে বাংলাদেশের সূচনা ছিল হতাশাজনক। জাওয়াদ আবরার ও অধিনায়ক আজিলজুল হাকিম তামিম ফেরেন দ্রুতই। দলীয় ৬০ রানে রিফাত বেগও আউট হলে বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। সেই সময় দলকে ভরসা দেন দুই ব্যাটার—কালাম সিদ্দিকি ও রিজান হক। দুজনের জুটিতে আসে ১৩৯ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ, যা ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচের গতি।
কালাম ১১৯ বলে ১০১ রান করে বিদায় নিলেও দলের জয়ের পথ অনেকটা সহজ করেছেন। রিজানও ছিলেন সমান দৃঢ়তায় ভরপুর, ৯৬ বলে অপরাজিত ৭৫ রানে ছিলেন তিনি। কালাম আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (১৯ বলে ১২*) ক্রিজে যোগ দেন, কিন্তু ততক্ষণে আলোকস্বল্পতা নেমে আসে বগুড়ার আকাশে।
৪৬ ওভারে বাংলাদেশ তখন ৪ উইকেটে ২৩১ রান তুলেছে, জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান ২৪ বলে। ঠিক তখনই ম্যাচের ইতি টানেন অফিসিয়ালরা—ডাকওয়ার্থ–লুইস পদ্ধতিতে ৫ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশকে। তাতে ১৬ বছর আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্বাদ বগুড়ার মানুষ জয়ের দেখাও পেয়েছেন।
এমআই