
ঝলক দেখালেন হামজা, তবুও ড্র দিয়ে শেষ করল বাংলাদেশ
খেলা ডেস্ক
২৫ মার্চ ২০২৫, ২১:৫৩
পজিশন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, কিন্তু মাঠজুড়ে সর্বত্রই খেললেন হামজা দেওয়ান চৌধুরি। এত দ্রুত পাসে তাল মেলাতে পারছিলো বাংলাদেশি ফুটবলাররা। সেখানে ভারতীয়দের কাছে যেন চমক হিসেবেই আর্বিভূত হয়েছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ফুটবলার। তবুও গোল শূন্য রেখে ম্যাচ শেষ করেছে বাংলাদেশ দল।
তবে গোলের মিসের আক্ষেপ কি কাটাতে পারবেন কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা? বাংলাদেশ গোলের পাঁচটি পরিস্কার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি। এমনকি ভারতীয় গোলরক্ষকের দুই ভুল থেকে বাংলাদেশ গোল পেতে পারতো। কিন্তু জালে বল জড়ানোতে বাংলাদেশিদের ব্যর্থতা যেন আরেকবার ফুটে ওঠেছে।
সবমিলিয়ে গোল শূন্য থেকেই ভারত থেকে ফিরছে বাংলাদেশ দল। তাতে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট তুলে নেওয়ার পরিবর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে মোটে ১ পয়েন্ট। তবে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে ড্র তুলে একেবারে অসন্তুষ্ট থাকার কথা নয় বাংলাদেশের। কারণ, এই ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচগুলোতে পরাজয় নিয়ে ফিরতে হয়েছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের।
তবে অভিষেক ম্যাচেই নিজের জাত চিনিয়েছেন হামজা চৌধুরী। সতীর্থদের প্রয়োজন অনুযায়ী নিচে ওপরে উঠেছেন। প্রতিপক্ষের পাস ধরেছেন, বল ক্লিয়ার করেছেন এবং আক্রমণেও উঠেছেন। যেখানে বল সেখানেই ছুটে গেছেন। বাংলাদেশের কর্নারগুলো হামজাই নিয়েছেন। মাঝে মধ্যে হামজার বাড়ানো থ্রু পাস ভারতের রক্ষণে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে।
প্রতিপক্ষের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে অধিকাংশ সময় হামজাই জিতেছেন। হামজার ট্রেডমার্ক স্লাইডিং ট্যাকেলে ভারতের আক্রমণ নসাৎও হয়েছে।
হামজার উজ্জ্বল দিনে নিষ্প্রভ ছিলেন ভারতের কিংবদন্তী ফুটবলার সুনীল ছেত্রী। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে তেমন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। কয়েক দফা বলের নাগাল পাননি আবার পেলেও ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি। তাই ভারতীয় কোচ মার্কোস ৮১ মিনিটে সুনীলকে তুলে নেন।
এদিকে হাইভোল্টেজ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সুযোগ মিস করেছে বাংলাদেশ। একেবারে খেলার প্রথম মিনিটে ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল কেইত বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড জনির পায়ে বল তুলে দেন। জনি একেবারে ফাকা পোস্ট পেয়েও সাইড জালে শট নেন। কিছুক্ষণ পর হামজার নেয়া এক কর্ণারে ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল গ্রিপ করলেও শট নেয়ার সময় বল বাধাগ্রস্ত হয়ে আবার ভারতের পোস্টের দিকে যায়। বাংলাদেশের হৃদয়ের শট ভারতীয় ডিফেন্ডার গোললাইন ক্লিয়ার করেন।
ম্যাচের ২২ মিনিটে বাংলাদেশের অধিনায়ক তপু বর্মণ চোট পেয়ে মাঠের বাইরে যান। আরেক ডিফেন্ডার রহমত মিয়া আর্মব্যান্ড নিয়ে মাঠে নামেন।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ বল পজেশন ও আক্রমণে ভারতের চেয়ে এগিয়ে ছিল। ৪১ মিনিটে গোলরক্ষককে ১:১ পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি জনি। ৩১ মিনিটে ভারতীয় গোলরক্ষকের বাড়ানো বলে দ্রুতগতির আক্রমণে ডান প্রান্ত থেকে ক্রস ভারতীয় ফরোয়ার্ডের হেড বাংলাদেশের ডিফেন্ডার গোললাইন সেভ করেন ফিরতি বলে ভারতীয় ফুটবলার জোরালো শট নিতে পারেননি ফলে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুলের সেভ করতে অসুবিধা হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায় অন্য ভারতকে। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ করতে থাকে স্বাগতিকরা। ৫৫ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর ক্রস সুনীল ছেত্রী বল মাথা ছোয়াতে পারলেই গোল হতে পারতো। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল পরাস্ত ছিলেন। ভারত একাধিক কর্ণার আদায় করে কয়েক মিনিটের মধ্যে। হামজা এই অর্ধে রক্ষণেই বেশি সময় কাটিয়েছেন।
৬০ মিনিটে বাংলাদেশ শাহরিয়ার ইমন ও জনির পরিবর্তে চন্দন রায় ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে নামায়। ৭৫ মিনিটে রাকিবের বাড়ানো বলে ফাহিম বক্সের মধ্যে গোলের সুযোগ পেয়েও মিস করেন। দুই মিনিট পর হ্যাভিয়ের দুই সোহেল রানাকে এক সঙ্গে নামানা হৃদয় ও মোরসালিনের জায়গায়। একাধিক খেলোয়াড় পরিবর্তন করলেও ম্যাচের ফল পরিবর্তন করতে পারেননি কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা।
এমআই