
‘ভয়ে টুপি ও হুডি পরে বাংলাদেশ ছেড়েছি’
খেলা ডেস্ক
২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১১
বাংলাদেশের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে যোগ্য মনে করতেন না বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিসিবিতে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এই কোচকে অযোগ্য বলে দাবি করতেন। সভাপতি হিসেবে বিসিবিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর একই কথা জানিয়েছিলেন ফারুক।
নিজের কথার যর্থাথতা প্রমাণে বেশি সময় নেননি। গত বছরের অক্টোবরে হাথুরুর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বিসিবি। এমনকি তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। এরপর বিসিবির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের চিন্তা করলেও সেটা ধোপে টিকেনি।
বরখাস্ত হওয়ার পর হাথুরুসিংহেকে দেশ ছাড়া নিয়ে ভয়ও দেখান বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি জানান, হাথুরু এখনি দেশ না ছাড়লে জনরোষের মুখে পড়তে পারেন। যা তার জীবন এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। পরে বেশ ভয় নিয়েই দেশ ছাড়েন লঙ্কান মাস্টারমাইন্ড।
বিমানবন্দরে বেশ উচ্ছ্বাস আর ক্যামেরার লেন্সে আটকে পড়া হাথুরু বিদায়বেলায় মাঝ রাতে এক প্রকার পালিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘কোড স্পোর্টস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা জানিয়েছেন তিনি।
হাথুরু বলেন, ‘আমার উদ্দেশে বাংলাদেশের সিইওর (বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) শেষ কথাটি ছিল, আমার চলে যাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে বোর্ডের কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। “আপনার কাছে কি (বিমানের) টিকিট আছে?” এটা আমার কাছে একটা সতর্কীকরণ সংকেত মনে হলো। তখনই আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত সেই দেশে (বাংলাদেশে) ভ্রমণের সময় আমি একজন গাড়িচালক এবং একজন বন্দুকধারী পেতাম। সেদিন তিনি বললেন, “আপনার সঙ্গে কি আজ বন্দুকধারী এবং গাড়িচালক আছেন?” আমি বললাম, না, আমার সঙ্গে শুধু গাড়িচালক আছেন।’
এরপর হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমি সোজা ব্যাংকে গেলাম, বাংলাদেশ ছাড়ার জন্য টাকা তোলার চেষ্টা করছিলাম। আমি যখন ব্যাংকে ছিলাম, তখন টিভিতে একটি ব্রেকিং নিউজ এল— “চন্ডিকা চাকরিচ্যুত, একজন খেলোয়াড়কে (নাসুম আহমেদ) লাঞ্ছিত করেছেন”। এটা দেখে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বললেন, “কোচ, আমি আপনার সঙ্গে যাব। মানুষ আপনাকে রাস্তায় দেখে ফেললে সেটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে না।”’
সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে এরপর বলেন, ‘এবার আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম। কারণ, আমাকে বাংলাদেশ থেকে বের হতে হবে। আমার এক বন্ধু আমাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি একটি টুপি ও হুডি পরে ছিলাম, কোনো ধরনের সুরক্ষা ছিল না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের মধ্যরাতের ফ্লাইটে আমি বাংলাদেশ ছেড়েছিলাম।’
বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হওয়ার নিয়েও আতঙ্কিত ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করার জন্য তারা (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) আমাকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করতে পারত। আমার মনে তখন এসবই ঘুরপাক খাচ্ছিল।’
এমআই