Advertisement
Us Bangla Airlines
নিজেকে ‘খারাপ ক্রিকেটার না’ বলে দাবি বিজয়ের, বাস্তবতা কী?

নিজেকে ‘খারাপ ক্রিকেটার না’ বলে দাবি বিজয়ের, বাস্তবতা কী?

খেলা ডেস্ক

২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:১৩

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে আলোচনায় ছিলেন না এনামুল হক বিজয়। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাকি ওপেনারদের ব্যর্থতায় হঠাৎ দলে ডাক পেয়ে যান এই ওপেনার। তিন বছর পর টেস্ট দলে বিজয়ের ডাক পাওয়া নিয়ে ওঠেছিল প্রশ্ন। কোন সমীকরণে জাতীয় দলে ডাক পেলেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

টেস্ট দলে বিজয়ের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গতকাল ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন প্রধান নিবার্চক গাজী আশরাফ লিপু। তিনি জানান, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিজয়ের উড়ন্ত ফর্ম দেখেই তাকে জাতীয় দলে সুযোগ দিয়েছেন। তবে সাদা বলে ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া বিজয় হঠাৎ লাল বলের ক্রিকেটে কতটা মানিয়ে নিবেন সেটা দেখার বিষয়।

এত সেঞ্চুরি করেও জাতীয় দলে কেন উপেক্ষিত বিজয়

জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে ইতিহাস গড়েছিলেন খুলনার এই ব্যাটার। স্বীকৃত ক্রিকেটে সবমিলিয়ে ৫১টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো ব্যাটারের এত বেশি শতক হাঁকানোর রেকর্ড নেই। ইতিহাস গড়া এই মাইলফলক নিয়ে এবার কথা বলেছেন এনামুল হক।

দেশের প্রচলিত এক পত্রিকায় ‘শতকের ফিফটি’ নিয়ে কথা বলেছেন ডিপিএলে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অধিনায়কত্ব করা এই ক্রিকেটার। ২০২৫ সালে ৫০টা সেঞ্চুরি করতে চান- ১১ বছর আগে কোন ভাবনায় ওই নোটটা লিখেছিলেন সেটা নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই ওপেনার। 

টেস্টে এখন পর্যন্ত ১০ ইনিংস সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। যেখানে এই ওপেনার মাত্র ১০ গড়ে করেছেন ১০০ রান। ওয়ানডেতে ৪৬ ইনিংসে ২৯ গড়ে করেছেন ১৩৫২ রান। সবশেষ ২৮ ম্যাচে ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ২৩! টি-টোয়েন্টিতে ২০ ইনিংসে ২৪ গড়ে করেছেন ৪৪৫ রান, স্ট্রাইক রেট ১১২। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সবশেষ খেলা ৭ ম্যাচে ১২ গড়ে করেছেন মাত্র ৯০ রান, স্ট্রাইক রেট ৯৫! 

সাক্ষাৎকারে নিজেকে ভালো ক্রিকেটার তকমা দিয়ে সেই ইস্যুতে বিজয় বলেন, ‘নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেই খেলে গেছি। জানতাম, আমি খারাপ ক্রিকেটার না। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই ২০১৪ সালে একদিন নিজের খাতায় লিখে রেখেছিলাম—২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি সেঞ্চুরি করতে চাই। যখন একটার পর একটা সেঞ্চুরি হচ্ছিল, তখন মনে হতো আমি হয়তো সেই সঠিক পথেই এগোচ্ছি।’

সেঞ্চুরির ফিফটির পর টেস্ট দলে জায়গা মিলেছে বিজয়ের। জাতীয় দলের জার্সিতে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০২২ সালে, ক্যারিবিয়ান সফরে। সবমিলিয়ে টেস্টে তার অবস্থা বেশ নাজুক। ১০ ইনিংসে ১০ গড়ে মাত্র ১০০ রান করেছেন এই ব্যাটার। নিজের বাজে অবস্থার পেছনে পরোক্ষভাবে বিসিবিকে দুষেছেন এনামুল হক।

তিনি বলেন, ‘আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে গেছি। কখনো বুঝতে পারিনি, একাদশে থাকছি না কেন; আবার হঠাৎ দলে ডাকও পাচ্ছি। আমাকে নিয়ে তাঁরা কী ভেবেছেন, সেটি তাঁরাই ভালো জানেন। যদি আরও ধারাবাহিক সুযোগ পেতাম, হয়তো ছবিটা ভিন্ন হতে পারত।’

ঘরোয়া লিগে সেঞ্চুরির বন্যা বইয়ে দেওয়া এনামুল হক নিজের রান সংখ্যা দেখে আত্মপ্রশংসা করতেই পারেন। তবে জাতীয় দলের পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে এই ওপেনারকে খুব একটা ভালো বলার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিজয়ের পরিসংখ্যান একবার জানা যাক।

টেস্টে এখন পর্যন্ত ১০ ইনিংস সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়। যেখানে এই ওপেনার মাত্র ১০ গড়ে করেছেন ১০০ রান। ওয়ানডেতে ৪৬ ইনিংসে ২৯ গড়ে করেছেন ১৩৫২ রান। সবশেষ ২৮ ম্যাচে ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ২৩! টি-টোয়েন্টিতে ২০ ইনিংসে ২৪ গড়ে করেছেন ৪৪৫ রান, স্ট্রাইক রেট ১১২। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সবশেষ খেলা ৭ ম্যাচে ১২ গড়ে করেছেন মাত্র ৯০ রান, স্ট্রাইক রেট ৯৫! 

জাতীয় দলের একজন ওপেনারের অবস্থা যেখানে এত নাজুক, সেখানে দলের অবস্থা অনুমিত। পাশাপাশি এমন অবস্থা নিয়েও নিজেকে ভালো ক্রিকেটার দাবি করা এনামুল হকের ব্যাটিং ব্যাকরণ নিয়েও থাকছে প্রশ্ন।

এমআই