
ক্রিকেটারদের ‘মানসিক শান্তি’ দিতেন না হাথুরুসিংহে!
খেলা ডেস্ক
৩০ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে দুই দফায় কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ২০১৪ সালের মে মাসে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৭ সালের অক্টোবরে আচমকা প্রস্থান করেন। তবুও ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় লঙ্কান গুরুকে নিয়োগ দেয় বিসিবি।
দ্বিতীয় মেয়াদে পূর্ণ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ দলকে থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান মাস্টারমাইন্ড। টাইগার স্পিনার নাসুমকে চড় মারার অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরে তাকে সরিয়ে দেয় বিসিবির তৎকালীন সভাপতি ফারুক আহমেদ। উভয় মেয়াদেই বেশ সমালোচিত ছিলেন এই শ্রীলঙ্কান।
এবার হাথুরুসিংহেকে বড় অভিযোগ করে বসলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ক্রিকেটার মনে করছেন, ক্রিকেটারদের মানসিক শান্তি দেওয়ার মতো কাজ করতেন না এই লঙ্কান কোচ।
সোহান বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার যখন ভালো খেলছে, তখন সে অতটা সাপোর্ট চায় না—কারণ সে নিজেই নিজের ছন্দে থাকে, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। কিন্তু যখন কেউ খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখনই তার সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দরকার হয়। সঠিকভাবে গাইড করা, মানসিকভাবে পাশে থাকা—এগুলোই তাকে ভালো পারফর্ম করতে সাহায্য করে।’
‘জাতীয় দলে যারা খেলছেন—চাই তারা বর্তমানে থাকুন, অতীতে ছিলেন বা ভবিষ্যতে আসবেন—তারা সবাই কোনো না কোনো পর্যায়ে পারফর্ম করেই এখানে এসেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেট হোক বা অন্য কোনো স্তরে, তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো একজন খেলোয়াড়ের মানসিক শান্তি—যা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।’
‘এই জায়গাতেই, আমার মনে হয় হাথুরাসিংহের একটা বড় ঘাটতি ছিল। মানসিকভাবে দুর্বল সময়ে খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়ানো, তাদের বিশ্বাস দেওয়া—এই দিকটায় তার সমর্থনের অভাবই অনেক সময় অনুভূত হয়েছে’- যোগ করেন সোহান।
একটি দলকে পরিবার হিসেবে গড়ে তুলতেও কোচের বড় ভূমিকা থাকা উচিত বলে মনে করেন সোহান। এই জিনিসটারই অভাব ছিল হাথুরুসিংহের। বাজে ফর্মে থাকা ক্রিকেটাররাই মানসিকভাবে সবচেয়ে চাপে থাকেন। সেই সময় তাদের পাশে অধিনায়ক বা কোচদের থাকা উচিত বলেই বিশ্বাস সোহানের।
সোহান আরও বলেন, ‘ক্রিকেট মূলত একটি দলগত খেলা। কোচের প্রধান কাজ পুরো দলটাকে পরিবার হিসেবে গড়ে তোলা। আপনি দল হিসেবে যখন একসাথে থাকতে পারবেন, তখন আপনার একজন সঙ্গী আপনার খারাপ সময়ে আপনাকে সাপোর্ট করবে। এতে দলটার ফলাফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।’
কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো ও হাথুরুসিংহেকে রেট করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় রাসেল ডমিঙ্গো ১০০ এর মধ্যে ৯০ পাওয়ার মতো। কারণ তার ম্যান ম্যানেজমেন্ট এবং প্লেয়ারদের তার উপর বিশ্বাস ছিলো। হাথুরুসিংহের ক্ষেত্রে হয়তো তার প্ল্যান ভালো। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে কোন প্লেয়ারই তারে বিশ্বাস করতে পারতো না।’
উল্লেখ্য, রাসেল ডোমিঙ্গের সময় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সোহান। তবে কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহে ফেরার পর এই উইকেটরক্ষক বাজে ফর্মে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। ঘরোয়া লিগে রান করে এখনো জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি তিনি।
এমআই