অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া বড় লক্ষ্য সামলাতে ভারতের ফলো অনে পড়ার আশঙ্কা জেগেছিল। তবে নীতীশ কুমার রেড্ডি ও ওয়াশিংটন সুন্দরের দৃঢ়তায় মেলবোর্নে বিপদ কাটিয়েছে ভারত। ব্যাটিংটা যেন একটু বেশিই সুন্দর করেছিলেন এ দুই অলরাউন্ডার। তাতে টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু নীতীশ কুমারকে ব্যক্তিগত ৯৭ রানে রেখে আউট হয়ে যান এ বোলিং অলরাউন্ডার।

ওয়াশিংটন সুন্দরের পর দাঁড়াতে পারেনি ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক জাসপ্রিত বুমরা। কামিন্সের ওভারের তিন বল খেলে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন টেস্টের সেরা বোলার। বুমরা যখন আউট হন, তখন নীতীশের রান ৯৯। পাশাপাশি কামিন্সের ওভারের আরও তিন বল বাকি, হাতে মাত্র ১ উইকেট। তাতে শঙ্কা জেগেছিল, টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটা পাবেন তো এ ব্যাটার?

ভারতীয় দলের শেষ ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন মোহাম্মদ সিরাজ। কামিন্সের ওভারের বাকি থাকা তিনটি বল কোনোমতে কাটিয়ে দেন তিনি। পরের ওভারে বোলিংয়ে আসেন স্কট বোলান্ড। ওভারের তৃতীয় বলটি মিড অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েই দৌড় শুরু করেন নীতীশ কুমার রেড্ডি। এতেই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটি পেয়ে যান এ অলরাউন্ডার।

সাদা পোশাকে মেইডেন সেঞ্চুরি করে একাধিক রেকর্ডও গড়েছেন নীতীশ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শচীন, প্যান্টের পর তৃতীয় যুব ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শতকের দেখা পেলেন তিনি। এছাড়া ভারতের জাতীয় দলের জার্সিতে ৮ নাম্বারে নেমে প্রথম সেঞ্চুরির হাঁকানোর মালিক তিনি। বিশ্ব ক্রিকেটে টেস্টে আটে নেমে এ নিয়ে তিনজন ব্যাটার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এ তালিকার শীর্ষে আছেন বাংলাদেশের আবুল হাসান।

শুধু ব্যক্তিগত নয়, জুটি গড়াতেও রেকর্ডের কীর্তি ছুঁয়েছেন নীতীশ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের হয়ে অষ্টম উইকেটে ওয়াশিংটন সুন্দরের সাথে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের (১২৭ রান) জুটি গড়েছেন এ ডানহাতি। এর আগে ২০০৮ সালে হরভজনকে সাথে নিয়ে ১২৯ রানে জুটি গড়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার।

নীতীশের এমন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি নিয়ে ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলের সাথে কথা বলেন তার বাবা মুত্যলা রেড্ডি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এ সেঞ্চুরি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য বিশেষ একটা মুহূর্ত। আমরা কখনোই এ দিনটি ভুলবো না। নীতীশ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছে। এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান পাচ্ছে, এটা আমাদের জন্য বিশেষ অনুভূতি।’

নীতীশের ব্যক্তিগত ৯৯ রানের সময় দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তার বাবা। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কারণ, এটা শেষ উইকেট ছিল। সিরাজকে ধন্যবাদ, সে ওভারের বাকি থাকা বলগুলোতে আউট হয়নি।’

এমআই