গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে টেনেটুনে নিজেদের সেরা আটে রেখেছিল বাংলাদেশ। এতেই নিশ্চিত হয়ে যায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিট। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচ দিয়ে আট জাতির এই টুর্নামেন্ট শুরু করবে গত আসরের সেমিফাইনালিস্ট বাংলাদেশ। তবে এবারের আসরে বাংলাদেশের লক্ষ্য অজানা।

খেলোয়াড়দের এমন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লক্ষ্য হওয়ার কারণ রয়েছে। কারণ, গত দুই বছর ধরে নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটে ছন্দে নেই বাংলাদেশ। গেল বছর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ৯ ম্যাচে ৬ হারের বিপরীতে টাইগারদের জয় মাত্র ৩টি। তিন সিরিজে দুটোই হেরেছে নাজমুল শান্তের দল। ক্যারিবিয়ানদের সঙ্গে সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ।

ওয়ানডে সিরিজের দুঃসময়ের স্মৃতি নিয়ে গতকাল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ দল। দুবাইয়ে যাওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সেখানে তিনি শুনিয়েছিলেন আশার বানী। গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই আমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যাচ্ছি।’

শান্তের এমন উচ্চ বিলাসী স্বপ্ন কতটা বাস্তবসম্মত, তার প্রশ্ন তোলা রইল। তবে এমন খর্বকার বাংলাদেশের পক্ষে বাজি ধরতে রাজি হননি দলটির সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। তার মতে, বাংলাদেশ ৭/৮ স্থানে অবস্থান নিবে। একই কথা শুনিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার রিকিং পন্টিং। তার মতে, বাংলাদেশ দলে মানসম্মত খেলোয়াড়ের অভাব রয়েছে।

গতকাল দুবাই যাত্রার আগে বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক ঘোষণা করে বিসিবি। নাজমুল শান্তের সহযোগী হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন ১০৩ ওয়ানডে খেলা মেহেদি হাসান মিরাজ। এই অলরাউন্ডারের মতে, এমন বাংলাদেশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখা অযৌক্তিক। বরং সেমিফাইনালে লক্ষ্য এই অলরাউন্ডারের।

দুবাইয়ে যাওয়ার আগে দেশের এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিরাজ এ কথা বলেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফাইনাল (খেলা) বলতে পারেন একটা ভাগ্যের ব্যাপার। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে প্রত্যেকটা ক্রিকেটারকে পারফর্ম করতে হবে ফাইনালে যেতে হলে। যারা আছে সবার পারফর্ম করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ২০১৭–তে সেমিফাইনাল খেলেছিলাম, এটা আমাদের জন্য আলাদা একটা কনফিডেন্স। ক্রিকেটারদের সবাইকে শতভাগ দিতে হবে তিন ম্যাচেই। আর তিন ম্যাচের মধ্যে যদি দুটো জিততে পারি, সেক্ষেত্রে একটা আশা থাকবে সেমিফাইনাল খেলার ব্যাপারে।’

সবশেষ কয়েক সিরিজ মিলিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে যেভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছে, তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গালগল্প শোনানোকে অযৌক্তিক মনে করছেন মিরাজ। আবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না, এমন ভাবনাটাও ভালো কিছু নয় বলে মনে করছেন তিনি। তবে ফাইনাল খেলতে কী করতে হবে, সেটাও বাতলে গিয়েছেন তিনি।

মিরাজ বলেন, ‘প্রত্যেকটা ক্রিকেটারই চাই যেকোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে, চ্যাম্পিয়ন হতে। তবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আসলে খেলার অবস্থা কি সেটার ওপর। এখন আমি যদি বলি যে আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো, এটা একটা অযৌক্তিক (কথা), আবার আমি যদি বলি যে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবো না, এটাও অযৌক্তিক। আমাদের লক্ষ্য প্রথম ম্যাচটা যদি জিততে পারি, তাহলে আমরা কিন্তু অর্ধেকটা এগিয়ে যাব। পরে পাকিস্তানে গিয়ে যদি একটা ম্যাচ জিততে পারি তাহলে কিন্তু আমাদের সুযোগটা বেশি থাকবে।’

এমআই