অপেক্ষা শেষে শুরু হচ্ছে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। আজ থেকে মাঠে গড়াচ্ছে ১৭তম এশিয়া কাপ। মরুর বালুকায় এবার বাজবে ক্রিকেটের ব্যাট-বলের সুর। ২০ দিনের এই ক্রিকেটযুদ্ধ চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এবারের আসর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, যার মূল লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি।

বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী, ম্যাচগুলো শুরু হবে রাত সাড়ে ৮টায়। তবে একটি ডাবল হেডা’র দিনে ম্যাচ দুটি হবে যথাক্রমে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। আবুধাবি ও দুবাইয়ের দুই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সব ম্যাচ। এর মাঝেই জেনে নিতে পারেন এশিয়া কাপের কিছু খুঁটিনাটি তথ্য।

এশিয়া কাপের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৮৪ সালে প্রথম এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবার অংশগ্রহণ করেছিল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ধীরে ধীরে টুর্নামেন্টটি এশিয়ার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসরে পরিণত হয়েছে। শুরুতে এটি ওয়ানডে ফরম্যাটে হতো, তবে পরবর্তীতে বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—দুই ফরম্যাটেই আয়োজিত হয়ে আসছে।

আয়োজক ভারত, ভেন্যু কেন আমিরাত

এশিয়া কাপে এবারের অফিসিয়াল আয়োজক ভারত, তবে ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে দুই দেশ পরস্পরের মাটিতে খেলতে পারে না। ভারত যদি টুর্নামেন্টটি নিজ দেশে আয়োজন করত, তাহলেও পাকিস্তানের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নিতে হতো। নানা নাটকীয়তার পর নিরপেক্ষ ভেন্যুতে মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়া কাপ।  

এশিয়া কাপে খেলবে কারা

এবারের এশিয়া কাপে অংশ নিচ্ছে আটটি দল। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ছাড়াও আরও থাকছে ইউএই, ওমান এবং হংকং। যারা ২০২৪ সালের এসিসি মেনস প্রিমিয়ার কাপ থেকে উঠে এসেছে। নেপাল সেমিফাইনালে ইউএই-এর কাছে এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে হংকং-এর কাছে হেরে অল্পের জন্য বাদ পড়ে।

ফাইনাল খেলতে যা প্রয়োজন

চার দল নিয়ে মোট আট দলের দুইটি ভিন্ন গ্রুপ। প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে একে অপরের সঙ্গে একবার করে খেলবে। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল যাবে সুপার ফোরে, যেখানে আবার পরস্পরের মুখোমুখি হবে। সুপার ফোর থেকে সেরা দুই দল খেলবে ফাইনাল, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে তা অনুষ্ঠিত হবে।

যেসব খেলোয়াড়ের দিকে নজর থাকবে

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪-এর চ্যাম্পিয়ন ভারত এবার পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামছে। তরুণ তারকা অভিষেক শর্মা, যিনি ইতিমধ্যেই দুটি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেছেন, থাকবেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পাকিস্তান দলে নেই বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফলে নতুন ব্যাটিং লাইনআপে সাহিবজাদা ফারহান ও হাসান নাওয়াজরা দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিচ্ছেন। 

বাংলাদেশও তরুণ ও অভিজ্ঞদের মিশেলে দল সাজিয়েছে। চমক উপহার দিতে পারেন যে কেউই। তবে তামিম-ইমনদের দিকে আলাদা করে নজর কাড়ছেন বিশ্লেষকেরা। এ ছাড়া নজরে থাকবেন আফগানিস্তানের এএম গাজানফার, ইউএই-এর মোহাম্মদ ওয়াসিম এবং হংকংয়ের ইয়াসিম মুর্তাজা।

ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য জমজমাট আসর

এশিয়া কাপ মানেই প্রতি মুহূর্তে টান টান উত্তেজন। ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের শ্রীলঙ্কাকে ৯১ রানে হারানো কিংবা হংকংয়ের ভারতের বিপক্ষে ২৮৬ রানের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া—এসব ম্যাচ এখনো স্মরণীয়। এবারের আসরেও থাকছে টানটান উত্তেজনা, নতুন মুখ, হাই-স্কোরিং ম্যাচ আর জমজমাট লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি।

এমআই