
তামিমের অবসরে মুশফিক-রিয়াদের স্মৃতিচারন, যা বললেন বাকিরা
খেলা ডেস্ক
১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৪
জাতীয় দলের জার্সিতে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত তামিম ইকবাল। লাল-সবুজের জার্সিতে সবশেষ খেলেছিলেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। এরপর নানান বিতর্ক আর ইস্যুতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াননি তামিম। যদিও জাতীয় দলে তামিমের ফেরা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা ছিল। সাবেক বিসিবি বস পাপন আর তামিম গণমাধ্যমে অস্পষ্ট কথা বলে অনিশ্চিয়তাকে আরও উসকে দিয়েছেন।
সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তামিমের জাতীয় দলে ফেরার অনিশ্চয়তা আবার উল্টো মোড় নিয়েছে। গুঞ্জন উঠেছিল, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে জাতীয় দলে ফিরতে যাচ্ছেন তামিম। এমনকি তামিমকে দলে ফেরাতে তোড়জোড় শুরু করেছিল বিসিবি। তবে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকা তামিম ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
দেশের জার্সিতে তামিমকে আর দেখতে না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়ছেন সতীর্থরা। সামাজিক মাধ্যমে তারা তামিমকে নিয়ে লিখেছেন আবেগঘন বার্তা। এ তালিকায় সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিক-রিয়াদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন জুনিয়র তানজিদ তামিমসহ আরও অনেকে।
তামিমকে নিয়ে মুশফিকুর রহিম লিখেন, ‘তোমার অবসরকালে আমি জানাতে চাই, তোমার অর্জনগুলো নিয়ে আমি কতটা গর্বিত তামিম। দোস্ত, তুমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের একজন অসাধারণ প্রতিনিধি ছিলে এবং বিশ্বমানের একজন ব্যাটার। দুবাইয়ের সেই জুটি আমার সারাজীবন মনে থাকবে, বিশেষ করে যখন তুমি চোট পাওয়া আঙুল নিয়েও ব্যাটিং করেছিলে। এটি তোমার দেশের প্রতি নিবেদন ও খেলাটার প্রতি ভালোবাসা স্পষ্ট করে। অবসর ভালো কাটুক দোস্ত। তোমাকে মাঠে খুব মিস করব, ক্রিকেটের কল্যাণে দুর্দান্ত এক বন্ধু পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ।’
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তামিমকে শুভকামনা জানিয়ে লিখেন, ‘তামিম, দীর্ঘ ও চমৎকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তোমার অসাধারণ অর্জনগুলোর জন্য অনেক অভিনন্দন। তুমি অনেক কিছু অর্জন করেছ এবং বাংলাদেশের দলের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছ। (পোস্টে দেওয়া ছবি প্রসঙ্গে) আমার মনে হয়, এটি ছিল আমাদের শেষবারের মতো বাংলাদেশের হয়ে একসঙ্গে ব্যাটিং। তোমার সঙ্গে খেলতে পারা এবং মাঠের ভেতরে-বাইরে এত স্মৃতি ভাগাভাগি করতে পারা সত্যিই অনেক আনন্দের ছিল। আমি তোমার অবসরজীবনের জন্য শুভকামনা জানাই এবং ভবিষ্যতের সকল কাজে সাফল্য কামনা করি। তোমার রেখে যাওয়া ঐতিহ্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
তামিমকে জাতীয় দলের ফেরার আহ্বান করেছিলেন জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বাঁহাতি ওপেনারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে শান্ত লিখেছেন, ‘প্রিয় তামিম ভাই আপনার নেওয়া সিদ্ধান্তকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। ২০১৬ সালে আবাহনীর হয়ে প্রথমবার আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা থেকে শুরু করে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার সুযোগ, আপনার কাছ থেকে শিখেছি অসংখ্য কিছু। আপনার ক্রিকেটীয় মেধা, সহ-খেলোয়াড়দের প্রতি আপনার যত্ন ও উদারতা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে।’
জাতীয় দলের তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ের অভিজ্ঞতা আছে সৌম্য সরকারেরও। তিনি লেখেন, ‘নতুন শুরুর জন্য এবং সারা জীবনের অমূল্য স্মৃতিগুলোর জন্য শুভেচ্ছা। অবসর কোনো শেষ নয়, বরং এটি এক নতুন সুন্দর অধ্যায়ের সূচনা। সামনের যাত্রাটা উপভোগ করুন। ভালো কাটুক অবসরকাল। মাঠে আপনার অভাব অনুভব করব।’
জাতীয় দলের আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ লিখেছেন, ‘আপনার অবসরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটল। দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে নিজের দক্ষতা, নিবেদন ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে আপনি এই খেলায় অমোচনীয় ছাপ রেখে গেলেন। বড় সেঞ্চুরি কিংবা চাপের মুখে দারুণ সব পারফরম্যান্সের অবদান আপনাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সত্যিকারের আইকন বানিয়েছে।’
End of an era—Tamim bhai, you’ve been a beacon of inspiration for us all. Your passion, dedication, and unwavering
Posted by Mehidy Hasan Miraz on Saturday, January 11, 2025
তামিমের সাথে ড্রেসিংরুম শেয়ারের অভিজ্ঞতা আছে তানজিদ তামিমের। তামিমকে কিংবদন্তি আখ্যা দিয়ে তানজিদ লিখেন, ‘আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং আমার পুরো জীবনের আইডল। আপনার ডেডিকেশন, প্যাশন, ইমপ্যাক্ট পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। আপনার জীবন হোক দীর্ঘ, লিজেন্ড।’
জাতীয় দলে তামিমের সাথে ভালো সখ্যতা ছিল তাইজুল ইসলামের। দেশসেরা ওপেনারের বিদায়ে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন টেস্টের অন্যতম সেরা বোলার। ফেসবুকে তাইজুল লিখেন, ‘নিজেকে সব সময় সৌভাগ্যবান মনে করেছি আপনার মত একজন লিজেন্ডের সাথে জাতীয় দলে খেলতে পেরে। আপনাকে আর জাতীয় দলের জার্সিতে সহযোদ্ধা হিসেবে পাব না এটাও মেনে নিতে পারতেছি না। ক্রিকেট দিয়ে যে দেশপ্রেম আপনার মধ্যে দেখেছি, এশিয়া কাপের সেই এক হাতে ব্যাটিং আমৃত্যু মনে থাকবে।’
এমআই