Advertisement
Us Bangla Airlines
রেকর্ড গড়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

রেকর্ড গড়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

খেলা ডেস্ক

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:৫৭

লক্ষ্যটা ১৯৫। বিপিএলের ফাইনালে ১৭৬ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। শিরোপার ধারা অব্যাহত রাখতে হলে তামিমদের রেকর্ড গড়েই জিততে হতো। সেই কাজটা শুরুতে সহজ করে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। মাত্র ২৪ বলেই করেছিলেন অর্ধশতক। তামিম আউট হওয়ার পর রানের চাকা সচল রাখলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বরিশাল। শেষ দুই ওভারে দলটির প্রয়োজন ছিল ২০ রান।

কিংসদের হয়ে ১৯তম ওভারে বল করতে আসেন বিনুরা ফার্নান্দো। ওভারের চতুর্থ বলে এই বোলারকে ছক্কা হাঁকান রিশাদ হোসেন। চিটাগংয়ের বাজে ফিল্ডিংয়ে বিনুরার ওভার থেকে ১২ রান আদায় করে ফরচুন বরিশাল। যদিও শেষ বলে অভিজ্ঞ নবীর উইকেট তুলে নেন বিনুরা। নবী আউট হওয়ায় কিছুটা আশা পাচ্ছিল চিটাগং শিবির। তাতে শেষ ওভার করার জন্য অলরাউন্ডার হোসাইন তালাতের হাতে বল তুলে দেন মোহাম্মদ মিথুন।

রেকর্ড গড়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি হোসাইন তালাত। ওভারের প্রথম বলে তাকে ছছক্কা হাঁকিয়ে কিংসদের আশা মাটি করে দেন রিশাদ হোসেন। পরের বলে সিঙেল নেন এই ডানহাতি। ম্যাচ টাই হওয়ার পর অবশ্য ডট বল আদায় করেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। কিন্তু এর পরের বলেই অতিরিক্ত বাউন্সে ওয়াইড বল করেন বসেন তিনি। তাতেই ৩ বল এবং ৩ উইকেট হাতে রেখেই বিপিএলে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তামিম ইকবালের বরিশাল। 

বিপিএলের ফাইনালে এতো রান এর আগে তাড়া করতে পারেনি কোনো দলই। ২০২৩ সালে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিতে শিরোপা ঘরে তুলেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এক আসর বিরতি দিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে দিল বরিশাল।  

চ্যাম্পিয়নদের জার্সিতে এদিন সর্বোচ্চ রান করেন তামিম ইকবাল। শরীফুলের বলে আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। যেখানে ৯ বাউন্ডারি এক ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন চট্টলার সন্তান। বরিশালের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছিলেন ক্যারিবিয়ান দানব কাইল মায়ার্স। ৩ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রানে আউট হন তিনি। মিডল ওভারগুলোতে বরিশালের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন এই ব্যাটার।

এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের দলটির হয়ে ৩২ রান করেছেন তাওহিদ হৃদয়। ওপেনিংয়ে নামা এই ডানহাতি নিজের পছন্দের স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন। একই ভুল করেছেন তার আদর্শের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। এই দুই ব্যাটার আউট হয়েছেন নাইম ইসলামের বলে। মুশি-হৃদয়ের বিদায়ে রিয়াদ, নবীরা কাজের কাজটা করতে পারেননি। বরং ১১ বলে ৭ রান করে দলের চাপ বাড়িয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।

রিয়াদ-নবীর ডাগআউটে পথ ধরার পর বরিশালের হয়ে মূল কাজটা সারেন রিশাদ হোসেন। ৬ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৮ রান করেন এই লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। রোমাঞ্চ জাগানো ম্যাচে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি।

চিটাগংয়ের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন শরিফুল ইসলাম। ৪ ওভারে ৩৪ রান খরচায় বরিশালের ৪ উইকেট তুলেন এই বাঁহাতি। এছাড়া নাইম ইসলাম ২টি এবং বিনুরা ১টি শিকার করেন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিং করেছিল চিটাগং কিংস। তামিমের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড গড়েন কিংসদের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন এবং খাজা নাফে। চিটাগাংয়ের এই দুই ওপেনার ৭৬ বলে ১২১ রান তুলেছেন। দুর্দান্ত এই জুটি ভাঙে নাফির বিদায়ে। পাকিস্তানি এই তরুণ ব্যাটার ৪৪ বলে তিন ছক্কা ও সাত চারে ৬৬ রান করেছেন। এর আগে ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাফি।

ফাইনালে চিটাগংয়ের রান পাহাড়, বরিশালের প্রয়োজন ১৯৫ রান

এবাদত হোসেনের স্লোয়ার ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়েছেন নাফি। তাতেও অবশ্য ম্যাচের লাগাম হাতে নিতে পারেনি বরিশাল। দ্বিতীয় উইকেটে গ্রাহাম ক্লার্ককে সঙ্গে নিয়ে ইমন গড়েন ৭০ রানের জুটি। টুর্নামেন্টজুড়ে চিটাগাংয়ের ব্যাটিংয়ে প্রধান স্তম্ভে পরিণত হওয়া ক্লার্ক ফাইনালেও ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন। তবে অপরপ্রান্তে বিপরীত মেজাজে ব্যাটিং করেছেন ইমন। ৩০ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পেলেও তিনি পরের ১৯ বলে করেছেন ২৮ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৯ বলে ৬টি চার ও ৪ ছক্কায় ৭৮ রান করেন ইমন।

গ্রাহাম ক্লার্কও ফিফটির পথেই ছিলেন। কিন্তু তার উইকেটটি কাটা পড়েছে রানআউটের ফাঁদে। এর আগে ২৩ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করেছেন ইংল্যান্ডের এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে চিটাগাংয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৯৪ রান। বরিশালের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেছেন এবাদত ও মোহাম্মদ আলি। একইসঙ্গে আলি সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিংও করেছেন।

এমআই