
অলিম্পিক গোল কী, ফুটবলে এর নামকরণ যেভাবে
খেলা ডেস্ক
০৮ আগস্ট ২০২৫, ২২:২৬
অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে ৮-০ ব্যবধানে গোল পায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন মিডফিল্ডার তৃষ্ণা রাণী সরকার। তবে তৃষ্ণাকে আড়াল করে সবচেয়ে বেশি আলোচনা এখন শান্তি মারডি। তিমুরের বিপক্ষে ‘অলিম্পিক’ গোল করেই শিরোনামে নাম তুলেছেন এই মিডফিল্ডার।
ম্যাচের ৩২ মিনিটে কর্নার থেকে সরাসরি বল জালে জড়ান তিনি। বলের সুইং আর উচ্চতায় প্রতিপক্ষের কোনো ফুটবলার বলটিকে আটকাতে পারেনি। এমনকি বাংলাদেশি কোনো ফুটবলারও এই বল স্পর্শ করেননি। কর্ণার সরাসরি ‘অলিম্পিক’ গোল করে অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন শান্তি মারডি।
অলিম্পিক গোল কী?
অলিম্পিক গোল হলো ফুটবলে এমন একটি ব্যতিক্রমী গোল, যা কর্নার কিক থেকে সরাসরি করা হয়। কর্ণার থেকে শট করা বলটি মাঠের অন্য কোনো খেলোয়াড়ের পা বা মাথা স্পর্শ না করেই সরাসরি জালে প্রবেশ করে। ফুটবলের নিয়মে এমন গোলকেই অলিম্পিক গোল বলা হয়।
সাধারণভাবে কর্নার কিক থেকে গোল করার সময় কেউ না কেউ বল স্পর্শ করে থাকে, কিন্তু অলিম্পিক গোলের বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে কোনো খেলোয়াড়ের স্পর্শ ছাড়াই গোল হয়। এটি মূলত গোলরক্ষককে চমকে দিয়ে বা ফ্লাইট মিস করিয়ে করা হয়। বলটিতে সাধারণত এমনভাবে স্পিন বা বাঁক দেওয়া হয় যাতে তা ইনসুইং হয়ে গোলপোস্টের ভেতরে ঢুকে পড়ে।
অলিম্পিক গোলের নামকরণ যেভাবে
অলিম্পিক গোলের নামের পেছনে রয়েছে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯২৪ সালে আর্জেন্টিনার ফুটবলার সেসারেও অন্সারিদে উরুগুয়ের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে কর্নার কিক থেকে সরাসরি গোল করেন। সেই সময় উরুগুয়ে সদ্য অলিম্পিক ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাই সেই গোলকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে বলা হয় “গোল অলিম্পিকো” বা “অলিম্পিক গোল”।
এরপর থেকেই ফুটবল বিশ্বে কর্নার থেকে সরাসরি হওয়া গোলকে অলিম্পিক গোল নামে ডাকা শুরু হয়। এই ধরনের গোল বেশ বিরল এবং চমকপ্রদ। সাধারণত বাঁ দিক থেকে ডান পায়ের ইনসুইং কর্নার বা ডান দিক থেকে বাঁ পায়ের ইনসুইং কর্নারে এ ধরনের গোল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
গোলরক্ষকের অবস্থান, প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের মনোযোগ ও বলের স্পিন—সবকিছুর নিখুঁত সমন্বয়ে এই গোল সম্ভব হয়।
বাংলাদেশের শান্তি মারডি যেমন এক ম্যাচে ডান দিক থেকে নেওয়া কর্নার কিকে সরাসরি গোল করেছিলেন, সেটিও ছিল একটি নিখাদ অলিম্পিক গোল—যেখানে কেউ বল স্পর্শ না করেই সেটি জালে প্রবেশ করেছিল। এমন গোল কেবল টেকনিক ও সময়জ্ঞান নয়, রীতিমতো সাহসিকতারও নিদর্শন।
এমআই